𝗗𝗲𝗮𝗿 𝗦𝘁𝘂𝗱𝗲𝗻𝘁𝘀,
ABBangla.Com এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তোমাদের সকলকে স্বাগত জানাই।
আজ তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিষয়ে রচনা যেগুলি তোমরা প্র্যাকটিসের মাধ্যমে খুব সহজেই আগত অঙ্গনওয়াড়ি পরীক্ষায় সফল হতে পারবে। তোমরা যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে রেগুলার আপডেট পেতে চাও তাহলে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারো আমাদের Whatsapp ও Telegram চ্যানেলের লিংক উপরে দেওয়া রয়েছে লিংকে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যাও।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিষয়ে রচনা
ভূমিকা:
রবীন্দ্রনাথ বিশ্বকবি। বাংলা কাব্যের ভাগ গঙ্গার তিনি ভগীরথ। মানুষের চিরন্তন আশা- আকাঙ্খা, সুখ-দুঃখ, মিলন-বিরহ নিয়েই তার রচনা সম্ভার। তিনি বিশ্ব সাহিত্যের এক কল্পবৃক্ষ। রবীন্দ্রনাথকে নিয়েই আমাদের প্রতিদিনের জীবন।
জন্ম ও শিক্ষা:
১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ৭ই মে (বাংলার ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ) জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে রবীন্দ্রনাথের জন্ম। পিতা মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতা সারদা দেবী, পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর। কাব্য, কবিতা ও শিল্প-সংস্কৃতি চর্চার সাধনপীঠ এই ঠাকুর পরিবার। ওরিয়েন্টাল, সেমিনারি ও নর্মাল স্কুলে তার শৈশব ও কৈশোরের কিছুটা সময় অতিবাহিত হয়েছিল। কিন্তু চার দেয়ালের গণ্ডিবদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থায় বালক রবীন্দ্রনাথের মন ভরে না। শেষ পর্যন্ত গৃহশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে গৃহে শুরু হলো শিক্ষা। নানান বিষয়ে গ্রন্থ গভীর মনস্কতার অধ্যয়ন। বিদ্যা চর্চার অঙ্গরূপেই শুরু হল অবিচ্ছিন্ন কাব্যচর্চা।
কাব্য চর্চার সূত্রপাত:
কাব্য চর্চা শুরু ছোট বয়স থেকেই। মাত্র ১৩ বছর বয়সেই তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার প্রথম কবিতার প্রকাশ। ১৭ বছর বয়সে পাড়ি দেন বিলেতে। উদ্দেশ্য আইনজীবী হওয়া। কিন্তু তিনি যে বাণীর বরপুত্র। পাশ্চাত্য সাহিত্য সংস্কৃতির সঙ্গে ঘটলো নিবিড় পরিচয়। দেড় বছর পরে ফিরে এলেন স্বদেশে। রচিত হল প্রথম গীতিনাট্য বাল্মিকী প্রতিভা। যা তার প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের সংগীতচর্চার এক আশ্চর্য ফসল।
কবি রবীন্দ্রনাথ:
আমার প্রিয় কবি মানুষের হৃদয়ের অনুভূতিকে ভাষায় রূপ দিয়েছেন। জীবনের প্রথম দিকে তার কাব্য যে উৎস মুখ খুলে গিয়েছিল, তাই কলতানে কল্লোলিত হয়ে উঠেছিল 'সন্ধ্যা সঙ্গীত, 'প্রভাতসংগীত, 'কড়ি ও কোমল'। 'ভানুসিংহের পদাবলী, 'মানসী' ও 'সোনার তরী'প্রভৃতি কাব্যগ্রন্থ। 'মানসী' থেকেই কবির ব্যক্তিত্বপূর্ণ রূপে প্রকাশিত হল। সোনার তরির পালে লাগল নতুন হাওয়া। সৃষ্টি হল 'চিত্রা', 'চৈতালি, কল্পনা', 'কথা ও কাহিনী', 'নৈবেদ্য', 'খেয়া' এবং 'গীতাঞ্জলি, 'গীতিমাল্য', ও 'গীতালি'। সোনার ফসলে ভরে উঠল বাংলার সাহিত্যের তরি। এখানে থেমে থাকা নয়; 'বলাকা, 'পলাতক, 'পূরবী, ও শ্যামলী'র ধারা বেয়ে তাঁর কাব্যতরি 'নবজাতক', 'সানাই, 'জন্মদিনে, 'শেষলেখা'র মধ্য দিয়ে বেয়ে চলেছে আমরণ। ১৯১৩ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজিতে 'গীতাঞ্জলি'র অনুবাদ করে তিনি 'নোবেল পুরস্কার এ ভূষিত হন। বাংলার কবি হলেন বিশ্বকবি। বাঙালির বড় সম্পদ রবীন্দ্র সংগীত। বীণা ও সুরের মধ্য দিয়ে বাংলা গানের বিশিষ্ট একটি ধারার জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর গানের সংখ্যা কয়েক হাজার। তাঁর গানে আমরা খুঁজে পাই প্রতিদিনের চলার পথের দিশা। ভারতের এবং স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তারই সৃষ্টি।
আমার প্রিয় কবি কেন:
তোমারেই করিয়াছি জীবনের ধ্রুবতারা। রবীন্দ্রনাথ আমার জীবনের আনন্দ-বেদনা সুখ-দুঃখ সবকিছুরই চিরসাথী। তিনি আমাকে শিখিয়েছেন যারে বলে ভালোবাসা তারে বলে পূজা। অন্তরের শেষ শ্রদ্ধা নমস্কার তার পায়ে নিবেদন করলাম। জীবনের প্রতিটি মাহেন্দ্রক্ষণ, দুঃখভারাক্রান্ত ক্ষণের এক নিভৃত সঙ্গী। আমার জীবনের আলোকিত উত্তরণের পথের দিশারী। রবীন্দ্রনাথ এমন একজন কবি যিনি তাঁর কাব্য দিয়েই নতশির মানুষের মুখে প্রতিবাদের ভাষা যোগান দিয়েছেন। জাতির কন্ঠে দিয়েছেন গণসঙ্গীত। দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক। জালিয়ানওয়ালাবাগে ইংরেজের পাশবিক অত্যাচারের প্রতিবাদে রাজকীয় খেতাব নাইট উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। ইনিত ভারতবর্ষের কোটি কোটি মানুষের অগ্রণী সৈনিক।
কবি রেখে গিয়েছেন অক্ষয় মানবসম্পদ। বোলপুরে শান্তিনিকেতনে শিক্ষা কেন্দ্রটি বহন করছে গঠনমূলক কীর্তির স্বাক্ষর। শান্তিনিকেতন সব দেশের মানুষের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষের মিলন ভূমি । কবি হয়েও তিনি সমাজসেবক ও দক্ষ সাংগঠনিক।
উপসংহার:
অবশেষে অম্লান মানবপ্রীতি, সাহিত্যের সোনার তরী, অফুরন্ত সংগীতের ভান্ডার এবং গভীর স্বদেশ অনুরাগ দেশবাসীর হাতে দিয়ে ২৫ বৈশাখের রবি অস্তমিত হল ১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ২২ শ্রাবণ। ভারত মাতার মূর্ত প্রতীক, সুন্দরের আরাধনার মানবতার পূজারি ছিলেন তিনি। আজও তিনি অম্লান। তাকে পেয়েই মানুষ চিরনন্দিত।
🙏 এই পোস্টটি শেয়ার করো প্রয়োজনীয়দের কাছে