ICDS অঙ্গনওয়াড়ি পণপ্রথা বিষয়ে রচনা @abbangla.com

 

ICDS পণপ্রথা বিষয়ে রচনা @abbangla.com


𝗗𝗲𝗮𝗿 𝗦𝘁𝘂𝗱𝗲𝗻𝘁𝘀,


ABBangla.Com এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তোমাদের সকলকে স্বাগত জানাই।


আজ তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, ICDS অঙ্গনওয়াড়ি পণপ্রথা বিষয়ে রচনা যেগুলি তোমরা প্র্যাকটিসের মাধ্যমে খুব সহজেই আগত অঙ্গনওয়াড়ি পরীক্ষায় সফল হতে পারবে। তোমরা যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে রেগুলার আপডেট পেতে চাও তাহলে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারো আমাদের WhatsappTelegram চ্যানেলের লিংক উপরে দেওয়া রয়েছে লিংকে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যাও।


ICDS অঙ্গনওয়াড়ি পণপ্রথা বিষয়ে রচনা


ভূমিকা : পণ প্রধা এক নির্লজ্জ মানসিকতার অপর নাম। এ প্রথার জটিল আবর্তে জড়িয়ে রয়েছে নারীসমাজ। সুপ্রাচীনকাল থেকেই সমাজে পণ প্রথ্য চলে আসছে। আধুনিক সভ্যতার বুকেও যা বিরাজ করছে ক্ষতচিঙ্গের মতাকে।


পণ কী : আভিধানিক অর্থে বিয়ের সময় বরকনেকে প্রদত্ত ধনকে বলা হয় পণ। কিন্তু বাস্তবিক অর্থে বিয়ের সময় বরপক্ষের চাহিদা বা দাবি অনুযায়ী কনেপক্ষ বরপক্ষকে যে অর্থ, ধনসম্পদ, আসবাবপত্র, অলংকার জমিজমা প্রভৃতি প্রদানের অঙ্গীকার করে তাকেই পণ হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। সেই সাথে কনেপক্ষের নিজেদের আগ্রহে যেসব অর্থসম্পদ বরকনেকে দেওয়া হয় তাও যৌতুকের পর্যায়ে পড়ে।


পণ প্রথার উৎপত্তি : হিন্দু ধর্ম মতে, পরিবারের মেয়েদের পৈতৃক সম্পত্তিতে কোনা েঅধিকার থাকে না। তাই হিন্দুসমাজে বাবা-মা মেয়ের বিয়েতে সাধ্যমতায় উপটৌকন দেয়। এটিই পণ প্রথার অন্যতম উৎস। এছাড়া বাংলায় মধ্যযুগে রাজা বল্লাল সেন কৌলীন্য প্রথা প্রবর্তন করেন। কৌলীন্য প্রথা অনুযায়ী, সমাজে সম্রান্ত ও উচ্চ বংশীয়রা বিশেষ সম্মান ও মর্যাদা ভাগে করত। সে যুগে তারা কুলীন বংশীয় হিসেবে পরিচিত ছিল। এ কুলীন বংশীয় পাত্রের সাথে মেয়ের বিয়ে দিতে নানা উপটৌকন দিয়ে বরকে প্রলুব্ধ করতে চাইতেন বাবা-মা। এ কৌলীন্য প্রথাও পণ প্রধার প্রসার ঘটিয়েছে। পরবর্তীকালে মুসলমান সমাজেও বিস্তার ঘটেছে পণ প্রথার। এ কুপ্রথার সাথে যেহেতু অর্থসম্পদ প্রাপ্তির বিষয়টি জড়িত তাই ধীরে ধীরে পণ নিয়ে শুরু হয়েছে পক্ষের দর কষাকষি এবং স্ত্রীকে নির্যাতনের মাধ্যমে পণ আদায়ের প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে


পণ প্রথার নিগড়ে নারীসমাজ : আধুনিক যুগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীর অধিকার স্বীকৃতি পেয়েছে। শিক্ষাদীক্ষায় ও কর্মক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের সাথে সমানতালে এগিয়ে চলেছে। কিন্তু পণ প্রথার নিষ্ঠুর নাগপাশ থেকে নারীসমাজ মুক্তি পায়নি। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি মানব উন্নয়নের প্রতিবেদনে প্রকাশ, যৌতুকের কারণে সমাজে অহরহ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে এবং এর নানামুখী নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সমাজে। বর্তমানে পণ কেবল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বিয়ের পরবর্তী সময়ে স্ত্রীকে চাপ দিয়ে নির্ঘাতন করে স্ত্রীর অভিভাবকের কাছ থেকে পণ আদায়ের ঘটনাও ঘটছে। নারীরা শারীরিক, মানসিক ও অপ্রীতিকর নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। নারীরা যে কেবল স্বামীর দ্বারাই নির্যাতিত হচ্ছে তা নয় শ্বশুর-শাশুড়ি, ননদ-দেবর মার্কেটকথা শ্বশুরপক্ষের নির্যাতনে- অপমানে-অবহেলায় শ্বশুরবাড়িতে বন্ধুর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ক্ষোভে-অপমানে অনেক নারী আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে। অনেক নারীকে হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিচ্ছে শ্বশুরপক্ষ। যৌতুকের কারণে স্বামী-স্ত্রীকে তালাক দিচ্ছে, স্বামী একাধিক বিয়ে করছে, পরিবার ভেঙে যাচ্ছে ভাঙা পরিবারের সন্তানরা বিপথগামী হচ্ছে, নিম্নবিত্তদের অনেক শিশু বাধ্য হয়ে শিশু শ্রমিকে পরিণত হচ্ছে। যৌতুকের কারণে নারীর দুঃখ-লাঞ্ছনা আর অপমানের চিত্র ফুটে উঠেছে রবীন্দ্রনাথের হৈমন্তী' গল্পের হৈমন্তী আর দেনা-পাওনা গল্পের নিরুপমার চরিত্রে


পণ প্রথা নিরসনের উপায় : আইন অনুযায়ী পণ নেয়া এবং দেয়া দুটোই শাস্তিযাগ্য অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একটি ধারায় বলা হয়েছে, যৌতুকের কারণে হত্যা করলে অথবা আত্মহত্যায় প্ররচিত করলে অভিযুক্ত ব্যক্তির প্রথমটির জন্য মৃত্যুদণ্ড এবং দ্বিতীয়টির জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং উভয়ক্ষেত্রে উক্ত দণ্ডের অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হবে। এত শাস্তির বিধান থাকা সত্ত্বেও পণ প্রথার অবসান ঘটেনি। তাই দেখা যাচ্ছে কেবল আইন করে পণ বন্ধ করা। সম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়াজন ১. আইনের ফাঁক গলে যাতে পণ দেয়া-নেয়া না চলে সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়া: পণবিরধী মানসিকতা দৃষ্টিভঙ্গির প্রসার: ৩. নারী অধিকার রক্ষায় পণ বন্ধে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করা। পশ্চাৎপদ নারীদের পুরুষনির্ভর মানসিকতার পরিবর্তন ঘটাতে দেশের নারী সংগঠনগুলাে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। ৪. আইনের সার্থক ও যধ্যযয প্রয়াগে।


উপসংহার : সর্বংসহা ধরি ধরিত্রীর মতই আমাদের দেশের নারীরা মুখ বুজে সকল অন্যায়-অত্যাচার সহ্য করে যায়। লাতে কলজ্জার ভয়ে, অর্থের অভাবে কিংবা ন্যায়বিচার পাবার অনিশ্চয়তায় আইনের সাহায্য নিতে চায় না। অথচ নারী আজ আর চার দেয়ালের ঘেরাটোপে বন্দি নেই, সমাজ-সভ্যতা নির্মাণের নানা পর্যায়ে নারীর মেধাবী অবদানে এগিয়ে চলেছে সমাজ পরিস্থিতিতে যৌতুকের মতা েঘৃণ্যব্যবস্থা কেবল নারীর জন্যই অপমান আর লজ্জা নয়, সমাজেরই কলঙ্ক। তাই কেবল কঠোর আইন করে নয়, পণ বন্ধের জন্য প্রয়া েজন মনের উদারতা, দৃষ্টিভঙ্গির প্রসারতা, সর্বোপরি নারীকে মানুষ হিসেবে মর্যাদা দেতার বিবেক।


🙏 এই পোস্টটি শেয়ার করো প্রয়োজনীয়দের কাছে


নবীনতর পূর্বতন