𝗗𝗲𝗮𝗿 𝗦𝘁𝘂𝗱𝗲𝗻𝘁𝘀,
ABBangla.Com এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে তোমাদের সকলকে স্বাগত জানাই।
আজ তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো, ICDS অঙ্গনওয়াড়ি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প বিষয়ে রচনা যেগুলি তোমরা প্র্যাকটিসের মাধ্যমে খুব সহজেই আগত অঙ্গনওয়াড়ি পরীক্ষায় সফল হতে পারবে। তোমরা যদি সোশ্যাল মিডিয়াতে রেগুলার আপডেট পেতে চাও তাহলে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে পারো আমাদের Whatsapp ও Telegram চ্যানেলের লিংক উপরে দেওয়া রয়েছে লিংকে ক্লিক করে জয়েন হয়ে যাও।
অঙ্গনওয়াড়ি স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প বিষয়ে রচনা
ভূমিকা : পশ্চিমবঙ্গ সরকারের একটি জনমুখি প্রকল্প হল স্বাস্থ্য সাথী। পশ্চিমবঙ্গের উচ্চ, মধ্য এবং নিম্নবিত্তের সকল নাগরিককে স্বাস্থ্যখাতে সাহায্য করার অঙ্গীকার নিয়ে সরকারের পাশে থাকার অনন্য প্রয়াস এই প্রকল্প। বিভিন্ন রোগ ও অসুখে একটা সংসার যখন অর্থনৈতিক অনটনে পথ হাতড়ায় তখন মানবিক সরকারের মুখ হয়ে সেই পরিবারের পাশে থেকে আগামীর নিশ্চিন্ততা দেওয়ার অনবদ্য প্রয়াস স্বাস্থ্য সাথী।
কারা পাবে : পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি পরিবারের প্রত্যেক সদস্য যে কোনো বয়সের হোক না কেন তারা এই প্রকল্পের অংশীদারিত্ব হতে পারে। যে কেউ অন্য কোনও স্বাস্থ্য প্রকল্পে নথিভুক্ত নন তারা এই কার্ডের সুবিধাগুলি পেতে পারেন যা মানুষকে হাসপাতালে নগদহীন চিকিৎসা পেতে সহায়তা করবে। যারা অন্য বেসরকারি চিকিৎসা বীমার আওতায় আছে কিংবা যাদের সরকারি স্বাস্থ্য বীমা আছে, এমনকি যারা বেতনে চিকিৎসা ভাতা নেয় তারা এই প্রকল্পের আওতায় বাইরে।
কোন ক্ষেত্রে কি রকম সুবিধা : এই জনহিতকর প্রকল্পে সাধারণভাবে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় প্রতিবছর সাধারণ ক্ষেত্রে উচ্চসীমা দেড় লাখ টাকা এবং দুরূহ রোগের চিকিৎসায় 5 লাখ টাকা পর্যন্ত প্রতিটি পরিবার সাহায্য পাবে। এই প্রকল্পের সম্পূর্ণ অর্থ পশ্চিমবঙ্গ সরকার ব্যয় বহন করবে।
আবেদন করার উপায় : দুয়ারের সরকার কিংবা প্রশাসনিক দপ্তরের পাশাপাশি অনলাইনেও স্বাস্থ্য সাথীর আবেদন করা যেতে পারে। অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের ওয়েবসাইটে গিয়ে হোমপেজ খুলে স্বাস্থ্য সাথী ফর্ম বি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। পরিবারের মহিলারা এই আবেদন করতে পারে।
সরকারি ঘোষণা : পশ্চিমবঙ্গের সকল নাগরিককে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য স্বাস্থ্য প্রকল্প 'স্বাস্থ্য সাথী' প্রসারিত করেছে। এই স্বাস্থ্য প্রকল্পটি আনুষ্ঠানিকভাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় 2016-তে ঘোষণা করেছিলেন। 2018 সাল থেকে এই স্বাস্থ্য কার্ড স্বাস্থ্য চালু হয়েছিল। তবে ব্যাপকভাবে প্রসারণ এর উদ্দেশ্যে ডিসেম্বর 2020তে নব উদ্যমে প্রচার করা হয়, জানুয়ারি 2001 সালে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প থেকে এর নথিভুক্তকরণ শুরু হয়।
আয়ুষ্মান ভারত ও স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের তুলনা : 2018 সালে কেন্দ্রের আয়ুষ্মান ভারত-এ অংশগ্রহণ করলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার 2019 সালে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। কেন্দ্রের 'আয়ুষ্মান ভারত' প্রকল্পের সাথে সমান্তরালভাবে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্প। আয়ুষ্মান ভারত'-এ কেন্দ্র ও রাজ্যের সাহায্যের তহবিল অনুপাত 60:40। যেখানে 'স্বাস্থ্য সাথী' সম্পূর্ণরূপে পশ্চিমবঙ্গ সরকার দ্বারা অর্থায়ন করা হয়। আয়ুষ্মান ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারের অর্থ সাহায্যের পরেও বাকি 2000 টাকা রাজ্য সরকার কিংবা ব্যক্তিগতভাবে দিতে হয়। আয়ুষ্মান ভারত আর্থসামাজিক ভিত্তির উপর যেখানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড আর্থ-সামাজিক মানদণ্ড ব্যতিরেকে দেওয়া হয়।
সুবিধা : স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের সমস্ত প্রিমিয়াম রাজ্য সরকার বহন করবে। ভোক্তাকে কোন ধরনের অর্থ ব্যয় করতে হবে না। রোগীকে মাধ্যমিক ও তৃতীয় স্তরের চিকিৎসার জন্য বার্ষিক প্রতিটি পরিবারকে 5 লাখ টাকা প্রদান করা হবে। কাগজহীন, অর্থহীন, স্মার্ট কার্ড ভিত্তিক এই প্রকল্প। এই প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার দুই হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে। হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমের নথিভুক্তিকরণ মূল্য, সাধারণ শয্যা ভাড়া, এক্স-রে এবং অন্যান্য পরীক্ষা, পরিষেবা জনিত মূল্য, শল্য চিকিৎসক, পরামর্শ, ওষুধ, পথ্য, আনাস্থেসিয়া, রক্ত, অক্সিজেন, শল্যচিকিৎসার মূল্য, শল্য চিকিৎসার যন্ত্রপাতি এমনকি পরিবহন ব্যয় এই স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে পাওয়া যাবে।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি এবং বেসরকারি মিলে পনেরশো তালিকাভুক্ত হাসপাতাল, এমনকি বাইরের দিল্লি এইমস, সিএমসি ভেলোর প্রভৃতি স্থানে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর ক্যাশলেস সুবিধা পাওয়া যাবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের সুবিধার জন্য পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটি নার্সিংহোমকে এই প্রকল্পের আওতায় আনার প্রচেষ্টা চলছে।
অসুবিধা : একটি হাসপাতাল কিংবা নার্সিংহোমের মোট শয্যার 15% স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের আওতায় আছে। তা হলে সবসময় স্বাস্থ্য কার্ডের সুবিধা পাওয়া নাও যেতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে সরকার যদি অর্থ পরিশোধে উদাসীন হয় তাহলে বেসরকারি ক্ষেত্রগুলিতে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের গুরুত্ব হারাবে।
উপসংহার : পশ্চিমবঙ্গের দরিদ্র সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি রোগে একটি পরিবার নিঃস্ব জর্জরিত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সাথী কার্ড তাদের আগামী জীবনের পাশে থাকার নিশ্চিত অঙ্গীকার দেবে।
🙏 এই পোস্টটি শেয়ার করো প্রয়োজনীয়দের কাছে